ফ্রিল্যান্সিং এর কাজসমূহ যার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা

বর্তমান সময়ে আত্মকর্মসংস্থান এবং বৃহৎ আয়ের উৎস হচ্ছে  ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখের অধিক এবং দিন দিন এই সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কিন্তু দক্ষ জনশক্তির অভাবে কাজ থাকা সত্ত্বেও অনেকে চাহিদাসম্পন্ন কাজে এখনো ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজসমূহ যা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। সেই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান এবং দিক নির্দেশনার  অভাবে অনেকেই পিছিয়ে পড়ছে তার কাংক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে। 

আপনাদের মেধা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কিভাবে সফল হবেন? 

বর্তমান সময়ে কোন কাজের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে?  

সেই বিষয়ে আপনার সুস্পষ্ট ধারনা থাকা প্রয়োজন যার উপর নির্ভর করে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন।

তাই দেরি না করে চলুন শুরু করি।    

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজসমূহঃ যার মাধ্যমে শুরু করতে পারেন  ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার

 

ফ্রিল্যান্সিং এর অনেক ধরনের কাজ আছে। আপনার ইচ্ছা এবং প্রারম্ভিক কিছু বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। ফ্রিল্যান্সিং এর সব কাজ যে সহজ আবার কঠিন তা কিন্তু নয়। আপনাকে সেই সব বিষয়ের উপর জ্ঞান, অধ্যাবসায়, কঠোর অনুশীলন মাধ্যমে দক্ষতা এবং পারদর্শিকতা অর্জন করতে হবে। যা ভবিষ্যতে আপনার ফ্রিল্যান্সার ক্যারিয়ারকে সহজ এবং সফল করবে।     

ফেসবুক মার্কেটিং এবং এডভারটাইজমেন্ট 

বর্তমান বিশ্বে ফেসবুকের মার্কেটিং এর কথা না বললেই নয়। 

কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ফেসবুক এক অনন্য ট্যুল হিসেবে কাজ করছে।  

যার মাধ্যমে যে কেউ তার পণ্য বা সেবা তার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌছানো সম্ভব।

আপনার যদি নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে থাকে আর আপনি যদি ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের ব্যবসার প্রচারণা করতে চান তাহলে আপনার ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে জানা অত্যাবশ্যক।        

ই-ক্যাবের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে প্রচলিত ই-কমার্স ব্যবসায় মোট ৭ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয় যার মধ্যে ১,০০০ কোটি টাকার লেনদেন শুধু এফ-কমার্স দ্বারা হয়েছে।

বাংলাদেশে লক্ষাধিক ব্যবসা শুধু এই ফেসবুক এর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে এবং ভবিষ্যতে এর অপার সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বে ফেসবুক মার্কেটিং এর রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। 

কারণ একটা ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে এড পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এবং বিশ্লেষণ যার জন্য প্রয়োজন হয় বিশেষ দক্ষতার।      

সেক্ষেত্রে ফেসবুক এডস এন্ড ফেসবুক মার্কেটিং মাস্টারি কোর্সটি হতে পারে আপনার জন্য সহায়ক যার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক মার্কেটিং এর পেইজ ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সঠিক টার্গেটিং, প্ল্যানিং এর স্বচ্ছ ধারনা পাবেন এবং নিজের দক্ষতা গড়ে তুলতে পারবেন।     

ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি

হাবস্পট এর এক বিশেষ সমীক্ষায়  ভিডিও মার্কেটাররা একমত হয়েছেন যে, ২০২১ সালে ৮৭ শতাংশ ভিডিও তাদের প্রচারণার পজিটিভ রিটার্ণ অন ইনভেস্টমেন্ট দিয়েছেন যা ২০১৫ সালে ছিলো মাত্র ৩৩ শতাংশ।      

এই পরিসংখ্যান দেখে সহজেই অনুমান করা যায়,  বর্তমান সময়ে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির চাহিদা এবং এর ভবিষ্যত সম্পর্কে।  

ভিডিও এর মাধ্যমে কোন পণ্য বা সেবার প্রচার এবং প্রসারের অনন্য মাধ্যম হলো ইউটিউব, যেখানে আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌছাতে পারবেন।     

আর সেজন্য আপনার প্রয়োজন হবে ইউটিউব সম্পর্কে বিশেষ দক্ষতার। কিভাবে একটি ভিডিও তৈরি করতে হয়? ভিডিও তৈরির সময় কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়? কোন কোন ট্যুল বা সফটওয়ার কম সময়ে ভিডিও সম্পাদনার জন্য সহায়ক? ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করার পর কিভাবে অপটিমাইজেশন করতে হয়? এসব খুটি নাটি বিষয় সম্পর্কে আপনার দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। 

তবে ভিডিও তৈরির ক্ষেত্রেও আপনার প্রয়োজন সৃজনশীলতা এবং উচ্চমানের ভিডিও তৈরির মানসিকতা যা অডিয়েন্সকে বারবার আপনার চ্যানেলে নিয়ে  আসতে সক্ষম হবে। 

সেক্ষেত্রে ইউটিউব মার্কেটিং ফর অল এবং কমপ্লিট ইউটিউব মার্কেটিং কোর্স দুইটি হতে পারে আপনার দক্ষতা তৈরির জন্য সহায়ক।      

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন 

এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে,  সারা বিশ্বের প্রায় ৯৩ শতাংশ অরগানিক ট্রাফিক বা ভিজিটর শুধু গুগল সার্চ, গুগল ইমেজ, গুগল ম্যাপ থেকে এসেছে।  

গুগল, ইয়াহু বা বিং সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে অর্গানিক ট্রাফিকের কাছে কোন পণ্য বা সেবা পৌছে দেয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব সম্পর্কে বলার কোন অপেক্ষা রাখে না।

লোকাল ব্যবসা থেকে শুরু করে ই-কমার্স এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বর্তমান বিশ্বে টিকে আছে এই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের এর উপর ভিত্তি করে। 

ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস যেমন আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার, পিপল পার আওয়ার এর মত প্ল্যাটফর্মে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ এস ই ও এর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি এবং এর ব্যপ্তি- বিস্তৃতি আসলেই চোখে পড়ার মত। 

শুধু যে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এই এস ই ও সীমাবদ্ধ তা কিন্তু নয়।

লোকাল এবং ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে এস ই ও সার্ভিস দেয়ার পাশাপাশি  অনেকেই ব্লগিং এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কোন বিশেষ পণ্য প্রচারণার মাধ্যমে অনেকেই অর্থ উপার্জন করছে।   

গুগলের মত সার্চ ইঞ্জিন যে কোন ওয়েব সাইট র‍্যাংক করানোর জন্য প্রয়োজন বিশেষ দক্ষতা এবং পারদর্শিকতা। 

সেক্ষেত্রে গুগল সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে? একটা ওয়েবসাইট র‍্যাংক করার জন্য কোন কোন ফ্যাক্টর গুলো কাজ করে? এস ই ও এর জন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ এবং কিভাবে কন্টেন্ট প্রস্তুত করতে হয়?

কিভাবে লিঙ্ক বিল্ডিং বা অফ পেইজ এস ই ও করাতে হয়? টেকনিক্যাল এস ই ও এবং অডিট কিভাবে করতে হয়? সে সম্পর্কে আপনার জানতে হবে। 

সেক্ষেত্রে এস ই ও মাস্টারক্লাস কোর্সটি আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে একটা প্রজেক্ট সম্পন্ন করতে হবে সেই সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান এবং দিক নির্দেশনা দিবে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং

ওয়েব স্ট্র্যাটেজি এর তথ্যমতে, ২০২১ সালে সারা বিশ্বে টোটাল মার্কেটিং বাজেটের এর ৪৬ শতাংশ ডিজিটাল মার্কেটিং এড এর জন্য ব্যয় করা হবে যদিও তা অনেকগুলো ফ্যাক্টরের উপর নির্ভরশীল।     

সহজেই বুঝতে পারছেন, বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বিস্তৃত এবং ব্যাপক স্থান দখল করে আছে।   

ছোট, বড়, মাঝারি সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রেডিশনাল মার্কেটিং এর পাশাপাশি কম বেশি এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।  

গুগল এবং ইউটিউব এড, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং,লিড জেনারেশন থেকে শুরু করে অনেক স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এর জন্য প্রয়োজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ডিজিটাল মার্কেটার। 

সেক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশেষ ধারণার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে  ডিজিটাল মার্কেটিং ব্লুপ্রিন্ট কোর্সটি করলে একজন ডিজিটাল মার্কেটিং প্রফেশনাল হিসেবে কিভাবে নিজের এবং অন্যের বিজনেস এর জন্য স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং করতে হয়- সে বিষয়ে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে পারবেন। 

গ্রাফিক্স ডিজাইন 

গ্রাফিক্স ডিজাইন বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন কাজ যার উপর ভিত্তি করে অনেকেই তার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করছে। 

কিন্তু এই গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব? এবং কিভাবে এই পেশায় নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব?- তা নিয়ে অনেকেই হিমশিম খায়। 

সঠিক বুঝে উঠতে পারে না আসলে কিভাবে শুরু করা উচিত? 

একটা কোম্পানির লোগো আর ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন থেকে শুরু হয় এর যাত্রা, এরপর ক্রমে ক্রমে বিভিন্ন এক্টিভেশনের জন্য ব্যানার পোস্টার ডিজাইন, সামাজিক মাধ্যম যেমন ফেসবুকের জন্য পোস্ট তৈরি, ক্যাম্পেইন ডিজাইন সহ অনেক কাজ আছে এই গ্রাফিক্স ডিজাইনে। একটা কোম্পানি কখনো এই কাজগুলো একা করতে পারে না। তার জন্য প্রয়োজন হয় মেধাবী এবং সৃজনশীল গ্রাফিক্স ডিজাইনার।

কিন্তু এই গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স সবার জন্য না। যারা সৃজনশীল কাজ করতে পছন্দ করে, যারা শিল্পকলা নিয়ে আগ্রহ এবং জ্ঞান আছে  এবং আউট অফ দ্যা বক্স চিন্তা করতে বিশেষ পারদর্শী তাদের জন্যই মূলত এই গ্রাফিক্স ডিজাইনিং।

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের পাশাপাশি ফুল টাইম চাকরিক্ষেত্রে গ্রাফিক্স ডিজাইনের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।  

তবে সাম্প্রতিক সময়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনে নতুন একটি ট্রেন্ড চালু হয়েছে তা হচ্ছে কাস্টমাইজড টি-শার্ট তৈরি। এক্ষেত্রে লোকাল ব্যবসার পাশাপাশি অনেকে ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে বিদেশে টি-শার্ট বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

সেক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ ডিজাইন মাস্টারি ফর প্রিন্ট অন ডিমান্ড হতে পারে আপনার ক্যারিয়ারের জন্য সহায়ক একটি কোর্স। যেখানে আপনি আপনার দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন অনায়াসে।       

অবশেষে একটা কথা না বললেই না, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পারদর্শিতা অর্জনের জন্য দরকার গভীর জ্ঞান এবং সঠিক দিক নির্দেশনা যার কোন বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য থাকতে হবে অটুট এবং থাকতে হবে লেগে থাকার মানসিকতা। আর এইভাবে একদিন আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার।

Search

জনপ্রিয় কোর্সসমূহ

সাম্প্রতিক ব্লগসমূহ

× Whatsapp