মাত্র ৯টি স্টেপে সাকসেসফুল ইউটিউব মার্কেটিং করার উপায়

মাত্র ৯টি স্টেপে সাকসেসফুল ইউটিউব মার্কেটিং করার উপায়

 

ইউটিউব মার্কেটিং বলতে মূলত ইউটিউবে ভিডিও তৈরির মাধ্যমে কোনো ব্র্যান্ড বা প্রোডাক্টকে ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে দর্শকের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং নতুন কাস্টমার তৈরি করার প্রক্রিয়াকেই বুঝায়।

ইউটিউবে যেহেতু ভিডিও কন্টেন্ট এর জন্যে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম, সেখানে অডিয়েন্সদের সংখ্যাও অধিক। গুগলের পর সবচেয়ে বেশি সার্চ করা ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ইউটিউব। এই প্ল্যাটফর্মের সাহায্য প্রোডাক্ট অডিয়েন্সদের সামনে আরো আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে, কাস্টমার বৃদ্ধি করতে, এবং বিজেনেসের মার্কেটিং এক্সপান্ড করতে সাহায্য করে থাকে।

ইউটিউব মার্কেটিং কেন বেশী এফেক্টিভঃ

ইউটিউব শুধুমাত্র এক বিনোদনের মাধ্যম নয়, ২২.৮ বিলিয়ন মানুষ প্রতি মাসে ভিজিট করে ইউটিউবে (ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রিপোর্ট অনুযায়ী), যা ইউটিউবকে গড়ে তুলেছে গুগলের পর সর্বাধিক সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে। ইউটিউব নতুন কোন ভৌগলিক স্থানে, একটি প্রোডাক্ট বা কোম্পানি কে মার্কেটিং করতে, একটি বড় কাস্টমার বেজড তৈরি করতে, এবং ব্র্যান্ড এর সেলস বাড়াতে সাহায্য করে। ইউটিউব একটি বড় লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ও বটে। টিউটোরিয়াল, গাইডলাইন, লেকচার, নোটস, ইত্যাদি তৈরির মাধ্যমে ইউটিউবে বেশ শক্ত অবস্থান নেওয়া যায়। তাছাড়া এটি অন্যান্য মার্কেটিং এডভার্টাইজিং এর চেয়ে অনেক কম ব্যয়বহুল।

একজন বিগেইনার যেভাবে ইউটিউব মার্কেটিং স্ট্রাটের্জি সেট করবেঃ

১। চ্যানেল খুলুন –

প্রথমত একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলুন যা খুবই সহজ, আপনি একটি গুগলে একাউন্ট খুললেই সেটি ইউটিউব একাউন্ট হিসেবে সেট হয়ে যাবে আর আপনি পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবেন। আর যদি গ্রুপ একাউন্ট খোলা লাগে তবে বিজনেস একাউন্ট খোলা ভালো।

২। আপনার টার্গেট অডিয়েন্স সম্বন্ধে জানুন –

আপনার টার্গেট করা অডিয়েন্স যাদের আপনি ভিডিও দেখাতে চাচ্ছেন তারা কোথায় থাকে, তাদের বয়স কত বা তাদের ইউটিউবে দেখা কন্টেন্টগুলোর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে কী ধরনের কন্টেন্ট থাকে এইগুলো যাচাই করুন। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের প্রয়োজন অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করুন যা তাদের দেখতে উৎসাহিত করবে।

যদি আপনার একটি বিজনেস একাউন্ট থাকে তবে বিজনেস একাউন্টের মাধ্যমে ইন্সাইটগুলো খেয়াল করুন। এটি আপনাকে আপনার অডিয়েন্স এর কোন ভিডিও নিয়ে আগ্রহ বেশি তা জানতে সাহায্য করবে।

ইউটিউব মার্কেটিং

৩। ইউটিউব এলগোরিদম অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করুন – 

ইউটিউবের নিজস্ব এল্গোরিদম রয়েছে, আপনি যদি র‍্যাংকিং এ উন্নত করতে চান তাহলে আপনাকে ইউটিউবের পরিচিত থাম্বনেইল তৈরি করতে হবে, আপনার ভিডিওর টাইটেল এবং ডেস্ক্রিপশন অপ্টিমাইজ করতে হবে, এবং র‍্যাংকিং রিচ করতে পারে এরকম কীওয়ার্ড গুলো ব্যবহার করতে হবে।

অন্যান্য চ্যানেল থেকে বেশী পরিচিতি, গুরুত্ব এবং অধিক সংখ্যক ভিউ পাওয়ার জন্যে এইগুলো সাহায্য করবে। একটি দৃষ্টি আকর্ষণকারী টাইটেল লিখুন, কীওয়ার্ড যেগুলো অডিয়েন্সরা বেশি খুঁজে থাকে সেগুলো ব্যবহার করুন। ইউটিউব এনালিটিক্স থেকেই আপনি এসব কীওয়ার্ড পেয়ে যাবেন। শুরুতেই কীওয়ার্ডসগুলো ব্যবহার করুন।

৬০ বা এর থেকে কম ওয়ার্ড নিয়ে অপ্টিমাইজড টাইটেল লিখুন। আপনার ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কীওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করা উচিত। ব্যবহারকারীদের পছন্দসই পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করতে, কার্ড, ইন্ড স্ক্রীন, ওয়াটারমার্ক বা বাম্পার এডভার্টাইজ আকারে CTA যোগ করুন। অবশেষে, অডিয়েন্সদের লাইক, কমেন্ট, সাবস্ক্রাইব এবং শেয়ার করতে উৎসাহিত করুন।

৪। সময়মত কন্টেন্ট আপলোড করুন –

আপনার চ্যানেলে কন্টেন্ট আপলোড করা শুরু করুন। সময়মতো আপনার ভিডিও আপলোড করার জন্য একটি সময়সূচী তৈরি করুন। এইভাবে, দর্শকরা জানতে পারবেন কখন নতুন ভিডিও আসছে। সর্বোচ্চ স্তরের এঙ্গেজমেন্ট এবং ভিউজ যেন হয় সেই টাইমটি সিলেক্ট করুন এবং পরবর্তীতে কোন সময়ে কনটেন্টগুলো যাবে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করুন।

আপনি যদি ইতিমধ্যে কিছু ভিডিও আপলোড করে থাকেন, তাহলে আপনি নতুন ভিডিও আপলোড করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত তারিখ নির্ধারণ করতে ইউটিউব এনালিটিক্স পরীক্ষা করতে পারেন।

৫। প্রতিযোগিদের বিশ্লেষণ করুন –

YouTube বিশ্বব্যাপী বিজনেস অ্যাকাউন্টসহ বড় একটি প্ল্যাটফর্ম, তাই প্রতিযোগিতাও বেশি। আপনার বিজনেস কম্পিটিটরদের বিশ্লেষণ করে, আপনার চ্যানেলে সেই অপর্চুনিটি ইউজ করার একটি বিশাল সুযোগ রয়েছে।

প্রথমত, আপনার ৩ থেকে ৫ টি সবচেয়ে সফল কম্পিটিটরদের চিহ্নিত করুন। এটি করার জন্য, আপনার ব্যবসায় এর সাথে সম্পর্কিত কীওয়ার্ডগুলোর উপর ভিত্তি করে কোন ব্র্যান্ডের সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কিং রয়েছে তা দেখতে আপনি কীওয়ার্ড এনালাইসিস সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করতে পারেন। সহায়ক তথ্য এবং অনুপ্রেরণা খুঁজতে ভিডিওগুলোর অধীনে তাদের মেট্রিক্স, টাইটেল, ডেস্ক্রিপশন এবং কমেন্টগুলোতে মনোযোগ দিন।

দ্বিতীয়ত, আপনার কম্পিটিটরদের শক্তি এবং দুর্বলতা নির্ধারণ করা উচিত এবং SWOT বিশ্লেষণ আপনাকে এটি করতে সাহায্য করবে।

We Make Pro

৬। নিজের চ্যানেল গুছান – 

যদি আপনি চান আপনার ইউটিউব চ্যানেল আরো অধিক সক্রিয় হউক তাহলে নিজের চ্যানেলে যা প্রয়োজন সকল ইনফর্মেশন সাবমিট করুন। অনেক ধরনের স্টেপ আছে যা করবার মাধ্যমে আপনি একটি সক্রিয় চ্যানেল হিসেবে বড় হয়ে উঠতে পারেন। যেমনঃ আপনার লোগো নির্বাচন করুন, চ্যানেল এর জন্য অনন্য নাম, প্রোফাইল, ডেসক্রিপশনে আপনার চ্যানেল ও তার কন্টেন্ট সম্পর্কে আপনার সাবস্ক্রাইবার যারা হবেন তাদের জানতে সাহায্য করুন, আপনার প্রোফাইল কমপ্লিট করুন।

আপনার চ্যানেল এর লিঙ্ক ও তথ্য অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসুন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওয়েবসাইট এ আপনার চ্যানেলে এর লিঙ্ক দিন যাতে আপনাকে খুঁজে পাওয়া সহজ হয়। আপনার চ্যানেলের জন্যে একটি এনার্জেটিক, ওয়েলকাম ট্রেইলার ক্রিয়েট করুন যা আপনার অডিয়েন্সদের মোটিভেট করবে, এবং তাদের সাবস্ক্রাইব করতে আরো ইন্সপায়ার করবে।

৭। আপনার ভিডিও গুলো প্রমোট করুন –

আপনার বানানো ইউটিউব ভিডিও গুলো প্রমোট করতে থাকুন। অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম গুলোতে কোয়ালিটিফুল এবং ইন্টারেস্টিং ভিডিও শেয়ার করুন, ফেসবুক, টুইটার বা অন্যান্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার চ্যানেল এ ট্রাফিক নিয়ে আসুন।

এতে করে আপনার মাউথ টু মাউথ প্রমোশনের ধাপ আর সম্ভাবনা বাড়বে। আরো উপায় রয়েছে ভিউয়ারসদের জানানো যে আপনার আপনার ভিডিওগুলো এখন লাইভে আসবে বা রিলিজ পাবে, এবং তার একটি মাধ্যম রয়েছে ইমেইল মার্কেটিং। বা চ্যানেল এ প্রিমিয়ার এর সময় সিলেক্ট করে দিয়ে ভিডিও প্রমোট করতে পারেন।

ইউটিউব মার্কেটিং

৮। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করুন – 

অনেক ইন্টারনেট মিডিয়ার লোক রয়েছে যাদের সাবস্ক্রাইবার আর ফলোয়ার অনেক এবং তারা অনেক সময় তাদের কন্টেন্ট এ ব্যবসায়িক প্রোডাক্ট, কোনো সার্ভিসের খবর, বা অফার প্রমোট করে থাকে। তার জন্যে এদের কাছে রিচ করে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্বন্ধে জানাতে হবে, প্রোডাক্ট এর ফিচার, ইউজ, এবং কাজ সম্বন্ধে অবহিত করে তাদের সাথে কোলাবোরেশন করে নিতে হবে।

৯। আপনার সাকসেস টার্গেট সেট করুন –

ইউটিউবে ভিডিও দেবার পর কতটা কোয়ালিটি ফুল হয়েছে, প্রতিযোগিদের থেকে উন্নত কিনা, আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের কাছে গ্রহণযোগ্য কিনা, আপনি আপনার সর্বোচ্চ টা দেবার সুযোগ পেয়েছেন কিনা এইসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আপনার চ্যানেল মনিটর করুন। আপনার গোল অনুযায়ী লক্ষ্য পূরণ করছে কিনা কন্টেন্ট তা তদারকি করুন। দ্রুত কাজের পরিধি বাড়াতে থাকুন। আপনার সাফল্যের পরিমান বাড়তে থাকবে।

Search

জনপ্রিয় কোর্সসমূহ

সাম্প্রতিক ব্লগসমূহ

× Whatsapp