ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বেশি কাজ পাওয়ার সহজ ১০ টি কার্যকরী কৌশল

ফ্রিল্যান্সিংক্যারিয়ারে মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। অনেকদিন ধরে মার্কেটপ্লেসে কাজ করেও অনেকেই আশানুরূপ সাফল্য পান না এবং কিছুদিন পর নানা কারণে হতাশ হয়ে পড়েন। অনেকেই বুঝতে পারেন না তাকে আসলেই কি করতে হবে? কিভাবে এই মার্কেটপ্লেসে টিকে থাকবেন? 

সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এই মার্কেটপ্লেসে নিজের অবস্থান আরো শক্ত এবং দৃড় করার জন্য কিছু কৌশল  অবলম্বন করতে হবে যা তার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারকে করবে আরো মজবুত এবং মসৃণ       

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কিভাবে বেশি বেশি কাজ পাওয়া যায় এবং সেখান থেকে কিভাবে লাভবান হওয়া যায় সে সম্পর্কে কিছু দিক নির্দেশনা এবং কার্যকরী কৌশল আলোচনা করবো আমাদের এই আর্টিকেল।

যদিও এই সংক্রান্ত The Secret of Six Figure Freelancer একটি বিশেষ কোর্স যার মাধ্যমে আপনি অনেক হিডেন ট্রিক্স এবং স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন এবং তা প্রয়োগের মাধ্যমে লক্ষাধিক অর্থ উপার্জনে সক্ষম হবেন।

মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে স্বচ্ছ জ্ঞান এবং সুস্পষ্ট ধারণা  

অনেকে মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করেন ঠিকই কিন্তু সে মার্কেটপ্লেস তার ধারণা পর্যাপ্ত এবং সঠিক নয়। একেক মার্কেটপ্লেসে কাজের ধরণ একেক রকম। কেউ প্রজেক্ট বেসিস আপনাকে নিযুক্ত করতে পারেন আবার কেউ মাসিক বা ঘন্টায় চুক্তি করতে পারেন। আবার আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সার এর মত মার্কেটপ্লেসে বায়ার জব পোস্ট করেন সেখান থেকে আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতা অনুযায়ী নির্বাচন করতে হয়। আবার ফাইভারের মত মার্কেটপ্লেসে বায়ার স্বয়ং নিজে আপনার পোর্টফোলিও এবং সার্ভিস ধরণ অনুযায়ী আপনাকে কাজের অর্ডার প্লেস করবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আপনি কাস্টম সার্ভিস অফার করতে পারেন।যদিও সব মার্কেটপ্লেসে নিয়ম নীতি একই আবার পলিসি এর ক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এসব সবকিছু বুঝে আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।     

একাউন্ট ক্রিয়েশনের সাথে সাথে প্রোফাইল অপটিমাইজেশন

শুধু নতুন  একটা একাউন্ট খুললেই আপনি সেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারবেন না। সেই সাথে প্রয়োজন প্রোফাইল অপটিমাইজেশন। অর্থাৎ যে টেকনিক এবং স্ট্র্যাটেজি অবলম্বনের মাধ্যমে আপনার প্রোফাইল ক্লায়েন্ট বা বায়ারের সম্মুখে আসবে সেই বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে এবং সময়ের সাথে তা আপগ্রেড করতে হবে।   

সৃজনশীল উপায়ে পোর্টফোলিও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্রিল্যান্সারা এই ব্যাপারে খুব উদাসীন থাকেন এবং সময়ের সাথে নিজের পোর্টফলিও আপডেট করেন না যার ফলে তার এডভান্সড স্কিলগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন হয় না। সেক্ষেত্রে আপনি সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারলেও এবং আপনার সক্ষমতা থাকার সত্ত্বেও বায়ার আপনার কাজের ক্ষেত্রে দ্বিধা সংশয় প্রকাশ করেন। আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি ভলিন্টিয়ার ভিত্তিতে কিছু কাজ করে প্রোফাইল ভারি করতে থাকেন। আর যদি দীর্ঘদিন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে থাকেন তাহলে মাস শেষে এমন সময় রাখুন যেখানে আপনি নিয়মিত প্রোফাইল আপডেট করতে পারবেন। সেই সাথে সৃজনশীলভাবে আপনার পোর্টফলিও কে আরো সুন্দর এবং আকর্ষণীয় কিভাবে করা যায় তার উপর গুরুত্ব আরোপ করুন

মার্কেটপ্লেসে পর্যাপ্ত সময়ের পাশাপাশি নিরবিচ্ছিন সংযোগ রক্ষা করা

দৈনিক আপনি অবশ্যই মার্কেটপ্লেসে সময় দেন এবং দিবেন সেই সাথে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক কাজে আপনাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। সেক্ষত্রে অবশ্যই এমন পদ্ধতি অনুসরন করেন যেখানে আপনি মার্কেটপ্লেসে নিরবিচ্ছিন সংযোগ রক্ষা করতে পারবেন। কারণ, কাজের জন্য নতুন হোক পুরাতন হোক বায়ার আপনাকে খুজতে পারে। সেক্ষেত্রে জরুরি মুহুর্তে আপনি তাকে সাড়া দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন বায়ারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে যেখানে সে দ্রুত সাড়া দেয়াকে খুব পজিটিভ্লি দেখেন এবং অন্যের কাছে কাজ হস্তান্তরের ঝুকিও কম থাকে। মনে রাখবেন, কাজে আবেদনে কোন ধরনের কালক্ষেপন করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব কাজের জন্য আবেদন করুন এবং সেই কাজ এবং সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করুন। 

কম্পিটিটর এর উপর নজর রাখুন

মার্কেটপ্লেসে আপনার মত অনেকেই একই সার্ভিস প্রদান করে থাকেন। তারা কোন কোন বিষয়ে বিশেষভাবে দক্ষ এবং তারা কিভাবে ক্লায়েন্টকে সার্ভিস প্রদান করে আসছে সেই সংক্রান্ত বিষয়গুলো আপনার নজরে রাখুন। কি কি সার্ভিস প্রদান করলে পরে বায়ার আপনার থেকে বেনিফিটেড হবেন এবং আলাদা ভ্যলু এড করবে সেই সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ক্লায়েন্টকে অবহিত করুন।      

বায়ারের সাথে কমিউনিকেশন রক্ষা করুন 

ক্লায়েন্ট এর সাথে কিভাবে কমিউনিকেশন করবেন? কিভাবে তার সাথে কথোপকথন শুরু করবেন? তাকে কিভাবে আপনার কাজ এবং কথা দ্বারা ইম্প্রেস করবেন?- তার নানা টিপস এবং ট্রিক্স সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। নিয়মিত কাজ সম্পর্কে আপনার বায়ারকে অবহিত করুন। এতে সে অনেকটা চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন। তাছাড়া কাজের শুরুতে যদি নেগোশিয়েশন করতে হয়? নেগোশিয়েশনের সময় কোন কোন বিষয়াদি মাথায় রাখা উচিত সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত।    

নিজের দক্ষতা প্রচার এবং প্রসারের পাশাপাশি বিক্রয় নিশ্চিত করুন

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে মার্কেটিং এবং সেলস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা দিনরাত সোশ্যাল মিডিয়াসহ অনেক  প্ল্যাটফর্মে নিজের সার্ভিস প্রমোশন করে বেড়ান কিন্তু যে জায়গায় তাকে এপ্লাই করা উচিত সেই সম্পর্কে তার কোন জ্ঞান নাই আবার সেখান থেকে কনভার্সন আসছে কিনা সেই বিষয়ে উদাসীন। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কাজ করতে হবে। আপনার কার্যকরী কৌশল এবং সঠিক সিদ্ধান্তই পারবেন আপনার বিক্রয়ের নিশ্চিত করবে। 

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস 

বায়ার এবং কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা

অনেকেই কাজ সম্পর্কে না জেনে, না বুঝে সেই কাজে আবেদন করা শুরু করে দেন। আবার কাজ শুরু পরে বুঝে উঠতে পারেন না। আবার কাজ শুরুর সময় যে যে বিষয় বায়ার থেকে জানতে হবে তা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে সংশয় প্রকাশ করেন। আবার অনেকেই বায়ার এবং তার কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখেন না যার ফলে কাজের সময় একজন ফ্রিল্যান্সারকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।     

কাজের সময়সীমা নির্ধারণ এবং কমিট্মেন্ট রক্ষা করা

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গেলে অবশ্যই ডেডলাইন নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। কোনভাবেই এই ডেডলাইন মিস করা যাবে না। যদি কখনো মিস হয় ক্লায়েন্টকে সেই ব্যাপারে আগে ভাগে অবহিত করুন। একবার ডেডলাইন মিস হয়ে গেলে কখনো সেই নিয়ে আপনার সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আপনার থেকে বায়ার কি কি পাবেন তা নিশ্চিত করুন। 

একাধিক মার্কেটপ্লেস নিয়ে কাজ করুন

অনেকেই শুধু একটিমাত্র মার্কেটপ্লেসের উপর নির্ভরশীল। তাই উচিত হবে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটা মার্কেটপ্লেস একসাথে নিয়ে কাজ করা। এক্ষেত্রে একটি মার্কেটপ্লেস থেকে কম অর্ডার আসলেও বাকি অন্যান্য মার্কেটপ্লেস আপনি ব্যালেন্স রাখতে পারবেন।  

আশা করি উপরে উল্লেখিত কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে অধিক পরিমাণে কাজ পেতে সাহায্য করবে এবং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গঠনে আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করবে। 

Search

জনপ্রিয় কোর্সসমূহ

সাম্প্রতিক ব্লগসমূহ

× Whatsapp